বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জে সদর জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ফরহাদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ফারদিনে মাথায় ও বুকে অসংখ্য আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা ধারণা করছি তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তার ভিসেরা টেস্টের পর বিস্তারিত আরও জানতে পারব।’
নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গতকাল সোমবার রাতে উদ্ধার করা হয় বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মরদেহ। সিদ্ধিরগঞ্জ বনানী ঘাট এলাকা থেকে নৌপুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিহত ফারদিন নূর পরশ শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক কাজী নুর উদ্দিন রানার ছেলে। তাদের স্থায়ী ঠিকানা ফতুল্লার নয়ামাটি এলাকায়।
সম্প্রতি বন্ধ ঘোষণা করা কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি আবারও চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। তবে শুধুমাত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে স্পেশাল ট্রেন হিসেবেই এটি চালু হবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহাদাত আলী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইঞ্জিন ও কর্মী সংকটে বন্ধ রাখা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেনটি আবারও বিশেষ ট্রেন হিসেবে চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১২ জুন থেকে পুনরায় চালু হতে যাওয়া বিশেষ ট্রেনটি চলবে ১ সপ্তাহ।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ মে) রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা (এসিওপিএস) কামাল আখতার হোসেন সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ট্রেন বন্ধের নির্দেশনা জারি করা হয়।
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ও বণ্যপ্রাণীদের প্রজনন মৌসুম হওয়ার কারণে ১ জুন থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ করায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ সময় পর্যটক, জেলে-বাওয়ালীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলও বন্ধ থাকবে।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সকল নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। এরপর ২০২২ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে নিষেধাজ্ঞার সময় এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে করা হয়। সেই থেকে প্রতি বছরের এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হয়।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মো. নুরুল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর জুন থেকে আগস্ট, এই তিন মাস সুন্দরবনে মাছ ও বণ্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশিরভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। তাই এ সময়ে সুন্দরবনে পর্যটকসহ জেলে-বাওয়ালীদের বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকে।’
তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি, তিন মাসের এ নিষেধাজ্ঞায় সুন্দরবন তার ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠে জীববৈচিত্র্য নিয়ে আবারও আগের রুপে ফিরবে।’
এদিকে, তিন মাসের নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে পড়েন সুন্দরবনের জেলে, বাওয়ালী ও পর্যাটন খাতের সঙ্গে জড়িতরা।
সুন্দরবন-সংলগ্ন চিলা এলাকার জেলে জামাল শেখ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে বন থেকে বাড়িতে ফিরে আসি। ঝড়ের কারণে মাছ ধরতে পারিনি। এখন তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কীভাবে সংসার চালাব?’
তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে সাগরে মাছ ধরা জেলেরা চাল পেলেও আমরা কিছুই পাই না। তাই সরকারের কাছে দাবি জানাই, আমাদেরও সহায়তা দেয়া হোক।’
সুন্দরবনের পর্যাটকবাহী বোটের চালক কালাম বলেন, ‘পর্যাটক না আসলে আমাদের বোট বন্ধ। নিষেধাজ্ঞার এ সময় আমাদের খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয়।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ও বাসা-বাড়িতে কাজ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত করার উদ্দেশ্যে নারী পাচার করে আসছে একটি চক্র। এমন অভিযোগে চক্রের মূলহোতাসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩।
গ্রেপ্তাররা হলেন, ইতি বেগম (৩৬) ও তার স্বামী ওমর ফারদিন খন্দকার ওরফে আকাশ (৩০)। র্যাব বলছে গ্রেপ্তার ইতি বেগম নারী পাচার চক্রের মূলহোতা এবং তার স্বামী ওমর ফারদিন খন্দকার ওরফে আকাশ তার প্রধান সহযোগী। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নারায়নগঞ্জের বন্দর বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বিকেলে র্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এএসপি মো. শামীম হোসেন দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানের বরাতে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের জনশক্তি রপ্তানীর কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। তারা সামাজিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের যুবতী ও কিশোরী নারীদেরকে দুবাইয়ের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ও বাসা-বাড়িতে উচ্চ বেতনে চাকুরী এবং বিনামূল্যে থাকা খাওয়ার লোভনীয় সুযোগ-সুবিধার কথা বলে ফাঁদে ফেলেন।
দেশের বিভিন্ন এলাকার অনেক দরিদ্র নারী টাকা পয়সা ছাড়া দুবাই গিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও স্বচ্ছল হওয়ার আশায় দুবাই যেতে রাজি হন। এই প্রলোভনে যারা রাজি হয় তাদেরকে চক্রটির মূলহোতা ইতি বেগমের দুবাই প্রবাসী বোন শিউলী বেগমের কাছে পাঠানো হয়। শিউলী বেগম মূলত দুবাইয়ে পাচার করা এসব নারীদের এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করে নিয়ে যান। পরবর্তীতে শিউলী বেগম তার সহযোগীদের নিয়ে পাচারকৃত নারীদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে অসামাজিক কাজে বাধ্য করেন।
এদের মধ্যে কেউ অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে অস্বীকার করলে ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গেলে তাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং দেশে থাকা পাচারকৃত নারীর পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখায়।
শামীম হোসেন আরও জানান, গত ৮ মার্চ চক্রটি বন্দর থানার ঝাউতলা এলাকার দরিদ্র পরিবারের একজন নারীকে রেস্টুরেন্টে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে দুবাইতে পাচার করে। দুবাই পৌঁছার পর কথা অনুযায়ী কাজ না পেয়ে এবং নির্যাতনের মাধ্যমে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী নারী তার পরিবারকে বিষয়টি জানান। একইভাবে দুবাইতে পাচার করা একাধিক নারীকে নির্যাতনের মাধ্যমে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও ভুক্তভোগী নারী তার পরিবারকে জানান।
ভুক্তভোগী ওই নারীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে বন্দর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই নারী পাচারকারী চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তা করা হয়। চক্রের পলাতক অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান এ র্যাব কর্মকর্তা।
কক্সবাজারের টেকনাফে মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন নোয়াখালীয়া পাড়ায় অভিযান চালিয়ে ৩ কেজি ১০০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ মিয়ানমারের দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে বার্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের আটক করা হয়। আজ শুক্রবার বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- মো. আলম (১৯) ও মো. আয়াছ (২১)। তারা দু’জনই মিয়ানমারের মংডু জেলার বাসিন্দা।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) একটি টহলদল মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন নোয়াখালীপাড়ায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন তল্লাশি শুরু করে।
এক পর্যায়ে শাহপরীরদ্বীপ হতে হাজমপাড়াগামী একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চেকপোস্টের কাছে এলে তল্লাশির জন্য থামানো হয়। অটোরিক্সার পেছনের সিটে বসা দুই যাত্রীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাদের দেহ তল্লাশি করা হয়।
এসময় তাদের হাতে থাকা ব্যাগের ভেতর থেকে ৩ কেজি ১০০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস উদ্ধার করা হয়।
জব্দকৃত ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ আটককৃত ব্যক্তিদেরকে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১০০ স্পর্শ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত বন থেকে ৯৬টি হরিণ এবং ৪টি বন্য শুকরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
বনের কটকা, কচিখালী, করমজল, পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলার চর ও নারিকেল বাড়িয়া এলাকা থেকে মৃত প্রাণীগুলো উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি ১৮টি হরিণ এবং একটি অজগর সাপ অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বন বিভাগ বলছে, ‘ঘূর্ণিঝড়ে বন বিভাগের বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। তবে আর্থিক মূল্যে নিরূপণযোগ্য নয়, এমন ক্ষতিই হয়েছে বেশি। যার মধ্যে অন্যতম হলো বনের শতাধিক পুকুর প্লাবিত হয়ে নোনা পানি ঢুকে পড়া। এতে বন্যপ্রাণী ও বনজীবীরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
১১ কিলোমিটার গোল বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ঝড়ে বনের গাছপালা ও প্রাণীর ক্ষতির প্রকৃত চিত্র কী, সেই হিসাব দিতে আরও সময় প্রয়োজন বলে বন বিভাগ জানিয়েছে।
বন বিভাগ ও সুন্দরবন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালে এবার ‘অস্বাভাবিক’ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় সুন্দরবন। স্বাভাবিক সময়ে ২৪ ঘণ্টায় ২ বার ভাটা এবং ২ বার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় বনের একটি অংশ। কিন্তু এবারই প্রথম ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগে থেকে পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টায় বনে কোনো ভাটা হয়নি। অর্থাৎ এই দীর্ঘ সময় পুরো বন পানিতে তলিয়ে ছিল। আর জোয়ারে পানির উচ্চতা ছিল স্বাভাবিকের চাইতে ৫ থেকে ৬ ফুট, কিছু এলাকায় এর চেয়েও বেশি। দীর্ঘ সময় এতো উুঁচ জোয়ারের কারণে মঙ্গলবার থেকে বণ্যপ্রাণীর বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করছিলেন বন কর্মকর্তারা।
বন বিভাগ থেকে আরও জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়ার পর বুধবার সকালে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কা সত্যি হতে থাকে। কটকা, কচিখালী, দুবলা, হিরণপয়েন্টের সৈকতে হরিণের মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর জানান স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ৯৬টি মৃত হরিণ, ৪টি বন্যশুকর উদ্ধার করে বন বিভাগ মাটিচাপা দিয়েছে। কিন্তু বিশাল আয়তনের সুন্দরবনে প্রাণীদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানাতে পারছে না বনবিভাগ।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি সুন্দরবন হয়েছে, আগে কখনো তা হয়নি। এর সঠিক তথ্য বের করতে আরও সময় প্রয়োজন।’
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর বনবিটের অধীন কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি এলাকায় টিলা ধসে গীতা কাহার (৩০) নামে এক নারী চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিন শ্রমিক।
স্থানীয়রা জানান, কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানের নারীসহ কয়েকজন শ্রমিক পার্শ্ববর্তী আদমপুর বনবিট এলাকার কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করতে যান। এসময় একটি টিলার অংশ ধসে পড়লে মাটি চাপায় তার মৃত্যু হয়।
গীতা কাহার পাত্রখোলা চা বাগানের নতুন লাইনের মৃত শংকর কাহারের কন্যা। আহতদের পাত্রখোলা চা বাগান হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য দেবাশীষ চক্রবর্তী শিপন।
আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন ও মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসিদ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তারা বনবিট এলাকায় খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজে ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে মরদেহ পরিবার সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ঘটনার সংবাদ পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।’
‘পিপাসা লাগলে একটু জল (পানি) খাব, সেই জলের ব্যবস্থাটুকুও নেই। ঝড়ের পর দুদিন ধরে শুধু চিড়া, মুড়ি ও লবণপানি খেয়ে বেঁচে ছিলাম। পরের দিন কয়েকজন ব্যক্তি এসে কিছু খিচুড়ি দিয়েছিল।’ খোলা আকাশের নিছে বসে এই কথাগুলো বলছিলেন শ্রাবন্তি মোন্ডল। যখন তিনি এসব কথা বলছিলেন, তখন তার চোখ থেকে বারবার পানি ঝরছিল। একদিকে ক্ষুদার যন্ত্রণা ও অন্যদিকে বাসস্থান এবং উপার্জনের মাধ্যম হারিয়ে অসহায় শ্রাবন্তি মোন্ডলের পরিবার এখন আশ্রয় নিয়েছে সড়কের ওপরে।
বসতবাড়ি হারানোর বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সারারাত ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে প্রচন্ড বাতাস ছিল। তখন আমরা ঘরের মধ্যেই ছিলাম। সকালে বাইরে গিয়ে দেখি প্রচণ্ড বেগে আমাদের বাড়ির দিকে পানি ছুটে আসছে। তখন থমকে যায়। কি করবো, কিছু বুঝে ওঠার আগেই কোমর সমান পানিতে বাড়ি তলিয়ে যায়। দিশেহারা হয়ে কিছু মালামাল নিয়ে সড়কে রেখে পুনরায় বাড়িতে গিয়ে দেখি বুক সমান পানি। ঘরের একপাশ ধসে পড়েছে। বাড়ির সব মালামাল পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।’
শ্রাবন্তি মোন্ডলের বাড়িতে অর্ধশতাধিক হাঁস ও মুরগি ছিল। জোয়ারের পানিতে হাঁসগুলো ভেসে যায়, কয়েকটি মুরগি ঘরের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিল, পরে পানির উচ্চতা বাড়লে মুরগিগুলো ঘরের মধ্যেই মারা যায়।
তিনি বলেন, ‘যখন ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখি মুরগিগুলোর নিথর দেহ পড়ে আছে, তখন আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলাম না। এতদিন ধরে প্রাণীলো আমাদের সাথে ছিল, তাদের বাঁচাতে পারলাম না। পরে মারা যাওয়া সব মুরগি বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দিয়েছি।’
হাঁস-মুরগির পাশাপাশি তাদের বাড়িতে তিনটি গরুও ছিল। পানি বাড়ার সময়ে গরুগুলোর গলার দড়ি খুলে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পানির সাথে ভেসে গিয়ে তারা কোথায় আশ্রয় নিয়েছে, তারও খোঁজ মিলছে না।
শ্রাবন্তি মন্ডলের মত তার প্রতিবেশি দিপালী সরদারও একই রকমভাবে বসতি হারিয়ে সড়কে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদেরও হাঁস-মুরগির পাশাপাশি গবাদি পশু, এমনকি ঘরে রাখা চাল ও পোশাক পানিতে ভেসে গেছে।
দিপালী সরদারের স্বামী প্রদীপ সরদার বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে চিংড়ি ঘের ছিল। ঘেরের আয় দিয়েই আমাদের সংসারের ভরণপোষণ হয়। তবে মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে দেখলাম ঘের পানিতে তলিয়ে গেল। হয়ত সেখানে এখন কোন মাছের পোনা মাছও পাওয়া যাবে না।
দিপালী ও শ্রাবন্তির বাড়ি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের গোপীপাগলা গ্রামে। এই দুটি পরিবারের মত অসহায় অবস্থায় রয়েছে ওই এলাকার ১৩ টি গ্রামের বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২২ নং পোল্ডারের অন্তর্ভুক্ত ওই গ্রামগুলো হলো- তেলিখালী, গোপীপাগলা, সৈয়দখালী, খেজুরতলা, সেনের বেড়, হাটবাড়ি, ফুলবাড়ি, বাগীরদানা, দুর্গাপুর, কালি নগর, দারুল মল্লিক, হাবিখোলা ও নোয়াই।
ঝড়ের রাতে ওই পোল্ডারের তেলিখালি এলাকায় ভদ্রা নদীর বাঁধের ৬০০ ফুটের বেশি ভেঙে যায়। তখন উচ্চ জলোচ্ছ্বাসের চাপ থাকায় পানি দ্রুত লোকালয়কে প্লাবিত করে।
ওই এলাকার স্বাস্থ্য সহকারী দীপিকা সরদার বলেন, এই পোল্ডারের মধ্যে ১৩ গ্রামে কমপক্ষে ১০ হাজার বা তার বেশি মানুষ বসবাস করে। এখানের মানুষের প্রধান আয় ছিল চিংড়ি চাষ ও গবাদি পশু এবং হাস-মুরগি পালন করা। তবে লোকালয় প্লাবিত হওয়া গবাদি পশুকে বাঁচানো গেলেও হাস-মুরগি বা চিংড়ির ঘের বাঁচানো যায়নি। তাই অসহায় মানুষরা বসতি ও উপর্জনের মাধ্যম হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে সড়কে আশ্রয় নিয়েছেন।
রোববার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরে ওই বাঁধ মেরামতে স্বেচ্ছায় অংশ নিয়েছিল এলাকার হাজারো মানুষ। তবে তাদের কয়েকদিনের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায়, বৃহস্পতিবার উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী একত্রে অংশ নিয়ে সেই বাঁধ জোড়া লাগাতে পেরেছেন। তবে বাঁধ জোড়া লাগলেও এলাকায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বাঁধ মেরামতে অংশ নেওয়া এনামুল গাজী বলেন, অনেক পরিবারের ঘর বিধস্ত হয়েছে। ঘের তলিয়ে গেছে। বলা যায় এই পোল্ডারের সব মানুষই কোন না কোন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ক্ষত কাটিয়ে উঠতে আমাদের কয়েক বছর সময় লাগবে। কারণ এখানে সবাই সীমিত আয়ের মানুষ, কেউ ইচ্ছা করলেই দিনের দিন একটি বসত বাড়ি নির্মাণ করতে পারেন না।
তবে টেকসহ বাঁধ নির্মাণ করা না হলে এই এলাকায় একই ধরনের ক্ষতি বারবার হবে বলে জানান স্থানীয় খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘১৯৬০ সালের দিকে পাকিস্তান সরকার এই বাঁধ নির্মাণ করেছিল। যার মেয়াদ ছিল ২০ বছর। তবে দু:খের বিষয় হল বিগত ৬৪ বছরের মধ্যে এই বাঁধ কখনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে বারবার কোন না কোন এলাকা প্লাবিত হয়। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর এই এলাকায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উত্তর চৌমুহনী, কলেজ রোড, হাটবন্দ, পানিদার, কাঁঠালতলী, হাকালুকিসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে উপজেলার ফসলি জমি এবং পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনসাধারণ। অন্যদিকে, সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সুরমা নদীসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়ছে। তবে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত রোববার রাত থেকে জেলায় টানা বৃষ্টি শুরু হয়। ঘূর্ণিঝড় রেমাল সাগরে সৃষ্টি হয়ে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হানার পর স্থল নিম্নচাপ হয়ে সিলেট অঞ্চল দিয়ে দেশের সীমানা অতিক্রম করায় অতিবৃষ্টির ঘটনা ঘটে। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাথারিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি গত তিন দিন ধরে পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনী, কলেজ রোড, আদিত্যের মহাল, হাটবন্দ, পানিদার এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
এদিকে বড়লেখা সরকারি ডিগ্রি কলেজ, নারী শিক্ষা একাডেমিতে পানি প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তাছাড়া বড়লেখা-কুলাউড়া সড়কের কাঁঠালতলী ও শাহবাজপুর সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ‘বিভিন্ন ছড়া পর্যাপ্ত খনন না হওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পানিতে এলাকার লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফসলি জমি, পুকুর, ফিশারিসহ অনেক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনীর একাংশে প্রধান সড়কের ওপর দিয়ে ও জফরপুর আঞ্চলিক সড়কে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক লোকজন ঘরবাড়ি ফেলে অন্যত্র স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী রিপন বলেন, ‘প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এতে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমার বাড়িতেও পানি। তবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এখন আবার লাগাতার বৃষ্টি হলে সমস্যায় পড়তে হবে।’
পৌর শহরে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ও বিভিন্ন ছোট-বড় ছড়া অবৈধভাবে ভরাট করে বাসা-বাড়ি স্থাপনা তৈরি করার কারণে পানি ঠিকমতো নিচ দিকে প্রবাহিত হতে পারছে না। সে জন্য অতি বৃষ্টিপাত হলেই উত্তর চৌমুহনীর একাংশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নিমজ্জিতের পরিমাণ আরও বাড়বে।
বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী বলেন, ‘পৌর এলাকার প্লাবিত অংশে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বড়লেখা সরকারি ডিগ্রি কলেজে পানিবন্দিদের আপাতত আশ্রয় এবং তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ছোট-বড় ছড়া অবৈধভাবে ভরাট করে স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে পানি নিষ্কাশনে ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করেও কোনো ফল পাইনি। পৌর শহরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও যথাযথ পানি নিষ্কাশনের উপযোগী নয় তাই ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় স্থানগুলো মেরামতের জন্য দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’
অন্যদিকে সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সুরমা নদীসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়ছে। তবে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সুনামগঞ্জের পাউবোর তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে গতকাল বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার। এর আগের দিন একই সময়ে পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার। এক দিনে পানির উচ্চতা বেড়েছে দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ মিটার। সে হিসাবে নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৩৯ মিলিমিটার। একই সময়ে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণেই উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। সুনামগঞ্জে বৃষ্টি কম হলেও উজানের নামা ঢলে নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা, পাটলাই, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রক্তি, বৌলাই, ছাতকের চেলা, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চলতি, জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে। তবে হাওরে এখনো পানি কম আছে।
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি বাড়ছে। উজানের ঢল নামা অব্যাহত থাকলে পানি বাড়া অব্যাহত থাকবে। এতে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে সুনামগঞ্জে এখনো বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।
জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার নরসিংদী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
নরসিংদীর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন (সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) ডা. আবু কাউছার সুমনের সভাপতিত্বে এ প্রেস ব্রিফিং-এ ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে ১টি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
আগামীকাল শনিবার ১ জুন ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৪০ হাজার ৪৮৭ জন শিশুকে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৮০৮ জন শিশুকে ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এ উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সিভিল সার্জন অফিস।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. মোবারক হোসেন, সাবেক সভাপতি নিবারণ রায় প্রমুখ।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে পাঁচ উপজেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় তিন লাখ মানুষ। আজ বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও দ্রুত বাড়ছিল পানি। ফলে আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে সিলেটের সব নদনদীর পানি।
পানিবন্দিদের জন্য জেলায় ৪৭০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া পানিবন্দিদের উদ্ধারে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। তবে দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নৌকার অভাবে তারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে পারছেন না।
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, পাহাড়ি ঢলে নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। এই বাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সিলেটের উজানে অবস্থান ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্য। রাজ্য দুটি সিলেটের চেয়ে উঁচুতে অবস্থিত হওয়ায় এই দুই রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হলে পানি ঢলের আকারে সিলেটের দিকে নেমে আসে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত কদিন ধরে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে মেঘালয়ে। এতে করে ঢলের তোড়ে সিলেটের সীমান্তবর্তী পাঁচ উপজেলা গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে।
দুর্গত এসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত সোমবার থেকে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হয়। এতে বাড়তে থাকে পানি। তবে বুধবার বিকেল থেকে অস্বাভাবিক হারে পানি বাড়তে শুরু করে। বুধবার একরাতেই তলিয়ে যায় এই পাঁচ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা। রাতেই পানি ঢুকে পড়ে এসব এলাকার বেশিরভাগ বাসাবাড়িতে। অনেকের ঘরে গলা পর্যন্ত পানি উঠে যায়। এতে আতঙ্ক দেখা দেয় বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে অনেকই রাতে ফেসবুকে পোস্টও দেন।
সীমান্তবর্তী পাঁচ উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে জানিয়ে সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদ্দুস বুলবুল বলেন, তিন লাখের মতো লোক বন্যায় প্লাবিত হয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো জেলায় ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ উপজেলার মধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬টি, জৈন্তাপুরে ৪৮টি, কানাইঘাটে ১৮টি, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫টি ও জকিগঞ্জে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এদিকে, অনেক সড়ক ডুবে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে যান চলাচল। বন্যার কারণে জাফলং, সাদাপাথরসহ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের এখন না আসার আহ্বান জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
জৈন্তাপুর উপজেলার ময়নারহা খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা সাজিদুর রহমান সাজন বুধবার রাতে আকুতি জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘হায়রে ফেরি ঘাটের নৌকা, একটা নৌকা নাইনি বাছাইবার লাগি। লাশ উদ্ধার অইমু হয়তো, জীবিত উদ্ধার অইতে পারতাম না, হয়তো এইটা শেষ পোস্ট।’
ভয়ে এমন পোস্ট দিয়েছিলেন জানিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সাজিদুর বলেন, ‘রাতে হু হু করে বাড়তে থাকে পানি। রাত ১০টার দিকে ঘরে পানি ঢুকে যায়। ১১টার দিকে ঘরের পানি হাঁটুর ওপরে উঠে যায়। কিন্তু ঘরে নারী ও শিশুদের অন্যত্র নেওয়ার জন্য কোনো নৌকা পাচ্ছিলাম না। রাত হওয়ায় কোনো মাঝি নৌকা চালাতে রাজি হচ্ছিল না। এমন অবস্থায় আতঙ্কে ফেসবুকে এমন পোস্ট দিই।’
অবশ্য পরে রাতেই তার পরিবারকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আনেন বলে জানান সাজিদুর।
জানা গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়ন, লেঙ্গুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলার অনেক বাসিন্দাই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে গবাদিপশু আর গোয়ালের ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে।
রুস্তমপুর এলাকার বাসিন্দা ফয়জুর রহমান বলেন, ঘরে কাল রাতে পানি উঠে গেছে। বাধ্য হয়ে ঘরের শিশু ও নারীদের অন্যত্র রেখে এসেছি। কিন্তু গোয়ালের গরুর কারণে আমি কোথাও যেতে পারছি না। আশপাশের সব জায়গা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গরুগুলো কোথাও নিতেও পারছি না। এভাবে আরও দু-একদিন গেলেই গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেবে।
এই উপজেলার সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক তলিয়ে যাওয়ার কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যমতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার ওপরে, কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপরে ও শেওলা পয়েন্টে ৫৬ সেন্টিমিটারে এবং সারি নদীর পানি জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপরে এবং সারিগোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত বুধবারের চেয়ে গতকাল সবগুলো নদীর পানিই বেড়েছে।
এভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে কানাইঘাটে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ১নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন, ২নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন, কানাইঘাট সদর, দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আকস্মিক ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা ও লোভা নদীর পানি বেড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলার সবকটি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, ধলাই নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি হওয়ায় ও পর্যটনকেন্দ্রসমূহ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রসহ সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, চলতি মাসের ৩০ দিনে সিলেটে ৭০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অথচ গত বছর মে মাসে বৃষ্টি হয়েছিল ৩৩০ মিলিমিটার। আগামী তিন দিন সিলেটে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন জানান, আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সার্বক্ষণিক তদারকি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজন হলেই তারা তৎপরতা শুরু করবে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পাদুকা শিল্পের ব্যবহৃত বর্জ্য ও টেকসই চামড়া শিল্প গড়ার লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভৈরব জান্নাত রেস্টুরেন্ট এন্ড রিসোর্টের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি সংস্থা সলিডার সুইস, ওশি ফাউন্ডেশন এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন আয়োজনে ‘এলায়েন্স বিল্ডিং মিটিং অন এনভায়নমেন্টাল ইমপেক্ট এন্ড রাইটস এট লেদার সেক্টর’ দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সলিডার সুইসের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ অক্যুপেশনাল সেইফটি হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ‘বিল্ডিং এ সাসটেইনেবল লেদার সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
দেশের সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে টেকসই খাত হিসেবে এগিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় একযোগে কাজ চলছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, কর্মশালায় ভৈরবের পাদুকা শিল্পের উন্নয়ন ও কারখানায় ব্যবহৃত চামড়া ও রিক্সিনের বর্জ্য অপসারণ ও রিসাইকেলিং করে ব্যবহার যোগ্য করার বিষয়ে পাদুকা শিল্পের সংশ্লিষ্টদের সচেতন হওয়ার ও পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দেন। যদি পাদুকা শিল্পে ব্যবহৃত চামড়া জাত পণ্য যদি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন করা হয় তাহলে চামড়া খাতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠবে। ভৈরবের পাদুকা শিল্পের উন্নয়ন, আর্থিক সহযোগিতা ও অতিরিক্ত বর্জ্য উৎপাদনজনিত পরিবেশ দূষণ নিরসন করার উপায়, চ্যালেঞ্জ ও কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের হেড অব ইভেন্ট খন্দকার আহমেদ শাহিদ, প্রোগ্রাম কোঅডিনেটর খাইরুল আনাম, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বোদন তৈয়বা, সমাজসেবা কর্মকর্তা রিফাত জাহান ত্রপা প্রমূখ।
রাজউকের অনুমোদনহীন ও নকসা বহিরভূত ভবন নির্মাণ করায় কেরানীগঞ্জের শাক্তা আরশিনগর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদার।
এসময় ছয়টি ভবনে অভিযানে চালিয়ে চারটি ভবনের বর্ধিত অংশ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ ভবন মালিককে ৫০ হাজার টাকা করে মোট আড়াই লাখ টাকা জরিমানা এবং আনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এসময় রাজউকের অথরাইজ অফিসার শেখ মোহাম্মদ এহসানুল ইমাম, ইমারত পরিদর্শক শুভ সাহাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ১৫টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো।
এর আগে সুন্দরবন থেকে আরও ৩৯টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ফলে সুন্দরবন থেকে মোট ৫৪টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রেমালের আঘাতে সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বন বিভাগের ফরেস্ট স্টেশন অফিস, ক্যাম্প ও ওয়াচ টাওয়ারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বনের ভেতরে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম ওয়্যারলেস টাওয়ারও। মিষ্টি পানির পুকুর নিমজ্জিত হয়েছে লবণাক্ত পানিতে।
খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪টি হরিণ এবং দুটি শূকর মিলিয়ে সুন্দরবনের ৫৬টি বণ্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত হরিণগুলো কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা ১৭টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা করা হয়। যা বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদী-খাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের গহিনে উঠে যাওয়ায় হরিণগুলো সাঁতরে কূলে উঠতে না পেরে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বনের অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ওপরে হবে।’